সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে বাঁকাই গ্রামে যানবহনের টায়ার পুড়িয়ে গ্রীন ওয়েল ও কালি তৈরির কারখানার সন্ধান। কারখানার কালো ধোঁয়া আর টায়ার পোড়ানোর দুর্গন্ধে পরিবেশ দূষণ করার অভিযোগ উঠেছে।
জানাযায়, উপজেলার ধামাইনগর ইউনিয়নের বাঁকাই গ্রামে সোহানুর রহমান সোহান গ্রীণ ওয়েল প্রোডাক্টাস নামের একটি কারখানা গড়ে তোলে। এই কারখানার পরিবেশ দূষনের অভিযোগে রায়গঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের বেশ কয়েকজন মিডিয়া কর্মীরা সরেজমিনে কারখানাটি পরির্দশনে যান।
এ সময় কারখানার ভারপ্রাপ্ত ম্যানেজার স্বপনের কাছে কারখানার পরিবেশ ছাড়-পত্রের কাগজ পত্র সহ অন্যান্য কাগজ পত্র দেখতে চাওয়া হয়। এসময় তিনি বলেন, এখানে কোন প্রকার কাগজপত্র নেই।
কারখানার সমস্থ কাগজপত্র ঢাকা হেড অফিসে রয়েছে। উক্ত কারখানাটি সরেজমিনে ঘুড়ে দেখা যায়, আবাদী কৃষি জমির পাশের্ব কারখানাটি স্থাপন করায়, কারখানার বর্জ্য নির্গত হয়ে আবাদী জমিতে প্রবেশ করে জমির ফসল নষ্ট হচ্ছে।
এছাড়াও কারখানার কালো ধোঁয়া ও টায়ার পোড়ানো দুর্গন্ধে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। আর এই পরিবেশ দূষনের কারনে গ্রামের বিভিন্ন বয়সের শ্রেনী-পেশার মানুষ নানা ধরনের জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশংকা রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে আরো জানাযায়, ৬টি শর্তাবলীর মাধ্যমে ধামাইনগর ইউপি চেয়ারম্যান রাইসুল হাসান উক্ত কারখানাটি পরিচালনা করার জন্য একটি ছাড়পত্র প্রদান করেন। কিন্তু সেই শর্ত ভঙ্গ করে কারখানাটি পরিচালিত হচ্ছে।
শর্তাবলীর মধ্যে রয়েছেঃ
(১) কারখানা স্থাপন ও পরিচালনার ক্ষেত্রে পরিবেশ সংরক্ষন আইন ও বিধি যথাযথভাবে অনুসরন করতে হবে।
(২) পরিবেশ অধিদপ্তর হতে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ছাড়পত্র গ্রহণ করতে হবে।
(৩) কর্মরত শ্রমিকদের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। (৪) উপযুক্ত অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং অগ্নিকান্ড কিংবা অন্যকোন দুর্ঘটানার সময় জরুরী নির্গমন ব্যবস্থা থাকতে হবে।
(৫) বায়ু ও শব্দ দূষণ করা যাবে না।
(৬) কারখানায় সৃষ্ট তরল বর্জ্য অপরিশোধিত অবস্থায় বাহিরে নির্গমন করা যাবে না। উল্লেখিত যে কোন শর্ত লংঘন করলে যথোপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কারখানার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া যাবে বলে উক্ত ছাড়পত্রে উল্লেখ রয়েছে।
অথচ এই গ্রীণ ওয়েল কারখানাটিতে শর্তাবলীর সব গুলো শর্ত ভঙ্গ করে আইনকে বৃদ্ধাআঙ্গুলী দেখিয়ে যানবহনের নানা ধরনের টায়ার পুড়িয়ে দৃর্গন্ধ আর কালো ধোঁয়ায় এলাকায় পরিবেশ দূষণ করে চলেছে।
কিন্তু স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপÍর থেকে এই পরিবেশ দূষণকারী কারখানাটির বিরুদ্ধে অজ্ঞাত কারণে কোন প্রকার আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।
এ বিষয়ে ধামাইনগর ইউপি চেয়ারম্যান রাইসুল হাসান সুমনের সাথে মুটোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, উক্ত কারখানাটিকে ট্রেড লাইসেন্স ও ৬টি শর্ত সম্বলিত একটি ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেয়ার জন্য। এরপর তিনি আর কিছু জানেন না।
এ বিষয়ে ধামাইনগর ইউনিয়ন আ:লীগের সাধারন সম্পাদক আহসান হাবিব সোহেল বলেন, আমি কারখানাটিতে গিয়ে ছিলাম। কারখানাটিতে টায়ার পোড়ানো দূর্গন্ধে ও কালো ধোঁয়ার কারণে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে বলে তিনি মিডিয়া কর্মীদেরকে জানান। কারখানাটি বন্ধ হোক তিনি এটা চান না, তবে পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ করা না হলে এলাকায় নানামুখী সমস্যা দেখা দিবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: রাজিবুল আলম ও সহকারি কমিশনার ভূমি সুবীর কুমার দাশের সাথে একাধিক বার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাদের কে ফোনে পাওয়া যাইনি।
এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-সহকারি আক্তারুজ্জামান টুকুর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন আমি এখন ছুটিতে আছি। অফিস না খুললে তিনি কোন তথ্য দিতে পারবেন না বলে জানান।
এ বিষয়ে কারখানার মালিক সোহানুর রহমান সোহানের সাথে মুটোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি কাগজ পত্র দেখাতে বাধ্য নই।কারখানাটির পরিবেশ দূষণ থেকে এলাকাবাসী বাঁচতে চায়।