সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় একটি বেসরকারি ঔষধ কোম্পানি হামিম ইউনানী ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের বিরুদ্ধে জীবন বিধ্বংসী হারবাল ঔষধ তৈরি ও পরীক্ষা ছাড়াই মানব দেহে প্রয়োগের অপরাধে উল্লাপাড়া মডেল থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শনিবার সন্ধ্যায় নীলা আক্তার নামের এক মহিলা বাদী হয়ে ৮ জন কর্মকর্তাকে আসামী করে এ মামলা দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, উল্লাপাড়া পৌরসভায় অবস্থিত হামিম ইউনানী ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড কোম্পানিতে ওয়ার্কার পদে চাকুরি করে আসছিল নীলা। কোম্পানির মালিক ডায়াবেটিক রোগের জন্য নতুন উৎপাদিত ডাইজিক কেয়ার নামে একটি ঔষধ উৎপাদন করতে চলেছেন।
ডাইজিক কেয়ার নামের উৎপাদিত ঔষধের (ক্যাপসুল) কিছু স্যাম্পল কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা ম্যানেজিং ডিরেক্টরের নির্দেশে হেকিম আলামিন ওয়ার্কার নীলাকে প্রদান করেন এবং বিভিন্ন ডায়াবেটিক রোগিদের মধ্যে বিতরণ ও প্রয়োগ করে ফলাফল জানানোর নির্দেশ দেন।
তিনি সরল মনে উৎপাদিত ঔষধ গ্রহন করে তার বাড়ী কয়ড়া নিয়ে যান। নীলার স্বামী নাজমুল হুদা ও শ্বশুর আসাব আলী তারা উভয়ে ডায়াবেটিক রোগী হওয়ায় তাদের দুথজনকেই উক্ত ঔষধ সেবন করান। সেবনের কিছু সময় পড়েই তার স্বামী ও শ্বশুর উভয়েই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়ার পথে তারা জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে স্বামী ও শ্বশুরকে নিয়ে নীলা বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
কর্তব্যরত চিকিৎসকের নিবির পরিচর্চায় ৪৮ ঘন্টা পর উভয়ে জ্ঞান ফিরে পান। পরীক্ষা করে তাদের শরীরে জীবন বিধ্বংসী ডিএম, এইচটিএন, হারবাল পয়জন শনাক্ত করেন চিকিৎসকরা। বর্তমানে অসুস্থ অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।এই কোম্পানীর বিরুদ্ধে যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট প্রস্তুত করে বাজারে বিপননের মাধ্যমে যুব সমাজকে ধ্বংসের অভিযোগ রয়েছে।
কোম্পানিটি উল্লাপাড়ার পৌর শহরের প্রান কেন্দ্র গ্যাসলাইন হাট সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত। সেক্সরের ঔষধ তৈরির কারখানা করে রাতারাতি কোটি প্রতি হয়ে গেছে। কোম্পানির মালিক স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যাক্তি, অনেক সাংবাদিককে ও উপর মহল ম্যানেস করে দীর্ঘ দিন এই অবৈধ ঔষধ তৈরি করে ঢাকা,নারায়ণগঞ্জ, কুষ্টিয়া, খুলনা চিটাগং সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় শোরুম করে বিক্রয় করে আসছে।
গেল বছর অভিযোগের পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান মোবাইল কোটের মাধ্যমে কারখানাটি ঘেরাও করলে তাকে বিভিন্ন অজুহাতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। পরবর্তীতে জেলা আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে এটি নিয়ে আলোচনা হয়। এই কার খানায় কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয় না। অদৃশ্য শক্তির কারনে কোম্পানি’র মালিক বার বার পার পেয়ে য়ায়।
জানা গেছে এই কোম্পানি থেকে অনেকই মাসহারা পান।এই দুরদর্শিতার কারনে আবার শুরু করে দিয়েছে হামিম ইউনানী ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের নতুন উৎপাদিত ডাইজিক কেয়ার নামের ক্যাপসুল।
যা খেয়ে অসুস্থ হয়ে পরছে অনেকে। এই ট্যাবলেটে শরীরে জীবন বিধ্বংসী পয়জন শনাক্ত হওয়ার অপরাধে বাদী নীলা আক্তার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ৮ জন কর্মকর্তাকে আসামী করে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেছেন উল্লাপাড়া মডেল থানায়। অভিযুক্ত আসামীরা হলেন- হামিম ইউনানী ল্যাবরেটরিজ লিঃ ঐষধ প্রস্ততকারী কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর আব্দুল গণি মন্ডল (৫৮), হেকিম মোঃ আলামিন (৪০), ম্যানেজার মোঃ আজিম (৩৫), পরীক্ষক মোঃ মাসুম (৩৬), মেশিন অপারেটর শিবলী মন্ডল (৩৭), সহকারি ম্যানেজিং ডিরেক্টর জাহাঙ্গীর (৪৫), মোঃ সুমন মন্ডল (৪০), কোম্পানির তত্ত্বাবধায়ক মোছাঃ রোজিনা বেগম।
উল্লাপাড়া মডেল থানার উপ-পরিদর্শক ও মামলা তদন্তকারি কর্মকর্তা গাজীউল হক জানান, ঔষধ কোম্পানিটির বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় বর্তমানে কোম্পানিটি বন্ধ রেখে অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছে। পুলিশ তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছে।