প্রতি বছরই ঈদের আগে টেইলার্সে শার্ট, প্যান্ট, পায়জামা পাঞ্জাবি,সলোয়ার কামিজসহ বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাক তৈরির জন্য ধুম পড়ে যেত টেইলারিং দোকানগুলোতে। গেল বছর থেকে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে লকডাউনে প্রায় সব ধরনের দর্জির দোকান বন্ধ থাকায় কাস্টমার গ্রামাঞ্চলের মহিলা ও পুরুষ দর্জির দিকে ঝুঁকে পড়েছে। ঈদের কালক্ষন ঘনিয়ে এলেও মানুষের মধ্যে ঈদ উদযাপনের আমেজ নেই। প্রতিবছর ঈদের আগে ছেলে মেয়েরা দোকান থেকে পাঞ্জাবি পায়জামা ও থ্রী পিচ কিনে টেইলার্সের দর্জিদের কাছে গাঁয়ের মাপযোগ দিয়ে সুন্দর করে পোশাক তৈরির জন্য জমজমাট পরিবেশ দেখা যেত। বর্তমান দূর্যোগপূর্ণ প্রেক্ষাপটে টেইলারিং দোকানগুলো প্রায় ফাঁকা দেখা যায়। কারখানার কারিগররা নির্বেকারে চেয়ে আছে কাস্টমারের দিকে।
কাজিপাড়া গ্রামের মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্র হাফেজ আল আমিন জানান ঈদ ঘনিয়ে এলো লকডাউনের কথা চিন্তা করে শহরাঞ্চলের টেইলার্সে না গিয়ে গ্রামাঞ্চলের মহিলা দর্জি দিয়ে ঈদের পায়জামা পাঞ্জাবি তৈরি করলাম। যদিও তৈরি করা ওতো সুন্দর হয় নাই তাবুও সন্তুষ্ট।
ঝিকড়া গ্রামের নবম শ্রেণির ছাত্রী চৈতির সাথে কথা হলে প্রতিবেদককে বলেন ঈদের আনন্দ নেই বল্লে চলে। আগে ঈদের ১০/১২ দিন পূর্বে মার্কেট থেকে ভালো মানের থ্রি পিচ কিনে ভালো দর্জি দিয়ে নিজেদের মনের মতো করে কোয়ালেটি সম্পন্ন জামা তৈরি করে নিতাম।কোভিড-১৯ এর প্রভাবে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। করোনা বিস্তারে মহামারী ঠেকাতে সরকার দিয়েছে লকডাউন।দর্জির পেশায় নিয়োজিত অধিকাংশ দর্জি দোকান বন্ধ করে বেকারত্বের ঘানি টানছে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি ঈদ আনন্দের সুন্দর ডিজাইনের পোশাক তৈরী থেকে।
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া পৌরশহরের নিউমার্কেটে ফাইভ স্টার টেইলার্সের মালিক পুলক কুন্ডু জানান বিগত ঈদে টেইলার্সগুলোতে ছেলে মেয়েদের শার্ট, প্যান্ট, পায়জামা পঞ্জাবি, সালোয়ার কমিজসহ অত্যাধুনিক ডিজাইনের পোশাক তৈরির ধুমপড়ে যেত। কর্মচারিরা রাত ১২টা পর্যন্ত কাজ করে কাজ শেষ করতে পারতো না। করোনার প্রভাবে আর লকডাউনে মানুষের কর্ম না থাকার ফলে তাদের হাতে টাকা পয়সার অভাবে ইচ্ছার সত্বেও ছেলে মেয়ের চাহিদা মতো পেশাক কিনে দিতে পারছে না। লকডাউনে দোকান বন্ধ থাকায় অধিকাংশ কাস্টমার মনের মতো করে পোশাক তৈরি করতে না পারলেও গ্রামের বাড়িতে গিয়ে মাহিলা ও পরুষ দর্জি দিয়ে পোষক তৈরি করে নিচ্ছে। ফলে দোকানে কেনাবেচা নেই বল্লে চলে।যতটুকু হয় তা দিয়ে দোকান ভাড়া,বিদ্যুৎ বিলের পয়সা হয় না।দোকান কেনাবেচা না থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে টেইলার্সের মালিক বেকার হয়ে পড়েছে কারিগর। তারা দুর্চিন্তার মধ্যে রয়েছে কিভাবে স্ত্রী সন্তান নিয়ে ঈদ করবে।
মুন্না ও শহিদুল ইসলাম নামের দুই কারখানার কারিগরের সাথে কথা হলে তারা জানান মোহাজন কাজ পায় না বিধয় আমাদের কাজ দিতে পারে না। আগে ৫ জন কারিগর ঈদের আগমুহূর্তে রাত ১২ টা পর্যন্ত কাজ করেও কাজ শেষ করতে পারতাম না। করোনায় লকডাউনে দোকান বন্ধ ছিলো,বেশির ভাগ কাস্টমার গ্রামাঞ্চলের দর্জি দিয়ে পোশাক তৈরি করে নিচ্ছে।কেউ বা রেডিমেড দোকান থেকে পোষাক কিনে নিচ্ছেন। কাজ না থাকায় ৩ জন কারিগর চলে গেছে। ছেলে মেয়ের ঈদের জামাকাপড় কেনা নিয়ে দুর্চিন্তার মধ্যে আছি।