কলাপাড়ায় আলোচিত বালিয়াতলী খেয়া পারাপারে নির্দেশিত টোল চার্ট উপেক্ষা করে যান্ত্রিক নৌকায় জনপ্রতি ৪ টাকার পরিবর্তে ১০টাকা, মোটর সাইকেল ১০ টাকার পরিবর্তে ৪০ টাকা, অটো রিক্সা-ভ্যান ৬ টাকার পরিবর্তে খালি ও পন্য বোঝাই প্রতি ১০০-১০০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হচ্ছে।
এছাড়া বাই সাইকেল, ছাগল, ভেড়া, গরু, মহিষ ও অন্যান্য মালামাল পারাপারে ইচ্ছেমত টাকা আদায় করা হচ্ছে। যেন বালিয়াতলী খেয়াঘাটে প্রকাশ্যে চলছে এ চাঁদাবাজি। নেপথ্যে রয়েছে প্রভাবশালী নেতা এবং তার পেছনে খুঁটি হিসেবে রয়েছে একজন প্রভাবশালী আমলা। যার দরুন খেয়া পারাপারের এ চাঁদাবাজি বন্ধে জনতার অভিযোগ, আবেদন, স্মারকলিপি কিংবা মানববন্ধন কোনটাই কাজে আসছেনা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আলোচিত এ খেয়াটি এবার ইজারাদার নিয়োগ না দিয়ে সরকারী খাস কালেকশনে নেয়ায় প্রায় কোটি টাকরা রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছে সরকার। ১৪২৭ সালে খেয়াটির দরপত্র আহবানে ৮৯ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার দরপত্র জমা পড়লেও ১৪২৮ সালে রহস্যজনক ভাবে দু’বার একটি দরপত্র না পড়লেও তৃতীয় দরপত্র আহবানে জমা পড়ে ৯ লক্ষ টাকার ইজারা দরপত্র। এরপর পরিকল্পিত ভাবে খেয়াটি খাস কালেকশনে নেয় প্রভাবশালী আমলা।
এতে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে খেয়া ঘাটের টোল আদায়কারীরা। অথচ জনগনকে জিম্মি করে খাস কালেকশনে আদায়কৃত অর্থের সঠিক কোন হিসেব নেই, যার সিকি ভাগ সরকারী কোষাগারে জমা পড়লেও সিংহ ভাগ যাচ্ছে কয়েকজনের পকেটে। আর টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজি বন্ধ হচ্ছে না কোন কিছুতেই।
সম্প্রতি মোস্তফা জামান সুজন নামের একজন সাংস্কৃতিক কর্মী তার ফেসবুক আইডিতে টোল আদায়ের নামে এ চাঁদাবাজির সাথে জড়িতদের নাম সহ প্রকাশ্যে এ চাঁদাবাজি বন্ধের জন্য ষ্ট্যাটাস দিয়েছেন।
তিনি লিখেছেন দীর্ঘদিন যাবৎ এর প্রতিকার চাইলেও ফলাফল শূন্য। টোল নিয়ে কথা বললেই লাঞ্চিত হয় যাত্রীরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এ প্রতিবাদ কোন কাজে না আসায় ২রা মে তিনি ইউএনও কলাপাড়াকে বিষয়টি লিখিত ভাবে জানিয়ে প্রতিকার চেয়েছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এখানে চলে কলাপাড়া উপজেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রিত কালেকশন ! কিন্তু চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি। গড়ে প্রতিদিন যদি ২০০ মোটরসাইকেল পারাপার হয় এই পথে। তাতে খাস কালেকশনে আদায় হচ্ছে প্রতিদিন চার হাজার টাকা। মাসে এক লাখ কুড়ি হাজার, বছরে ১৪ লক্ষাধিক টাকা শুধু মোটরসাইকেল ভাড়া। এরপর মানুষ পারাপার, বাই সাইকেল, ছাগল, ভেড়া, গরু, মহিষ ও অন্যান্য মালামাল পারাপার তো আছেই।
উপজেলা প্রশাসন সবসময় বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। শুধু বালিয়াতলী খেয়াঘাটে নয়, সব ক’টি খেয়াঘাটেই এখন অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। যেন খেয়া ঘাটে চলছে চাঁদাবাজির মহোৎসব। এ যেন বেড়ায় ক্ষেত খাবার অবস্থা।