আ.লীগ নেতা মিজান পাটওয়ারীর উপর হামলার প্রতিবাদে জকসিন বাজারের ব্যবসায়ীরা এক সভার আয়োজন করে। এতে ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান তারা।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার জকসিন বাজারে আওয়ামীলীগ নেতা মোজাম্মেল হোসেন মিজান পাটওয়ারীর উপর হামলার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাজারের ব্যবসায়ীরা। হামলার ঘটনায় তারা নিন্দা প্রকাশ করেন এবং দোষীদের বিচারের দাবি জানান। একই সাথে আওয়ামীলীগ নেতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতিহত করার ঘোষণা দেন তারা। এর আগে গত বুধবার সকালে বাজার কমিটির সদসরা আলোচনা সভায় বসেন। এ সময় তারা এ ধরণের সিদ্ধান্ত নেন বলে জানা গেছে।
উল্লেখ, সম্প্রতি মিজান পাটওয়ারী স্থানীয় একটি মসজিদের জন্য হাদিয়া আদায়ের সময় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতাদের হাতে লাঞ্ছিত এবং হামলার শিকার হন। এ ঘটনায় তিনি বাজার কমিটির কাছে অভিযোগ করেন এবং সদর থানায় হামলাকারীদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন। অন্যদিকে, ওই ঘটনার কয়েকঘণ্টা পর সেখান হামলার শিকার হন খোরশেদ নামের জকসিন বাজারের এক দোকান মালিক। এ ঘটনায় তিনি আওয়ামীলীগ নেতা মিজান পাটওয়ারীকে প্রধান আসামী করে হামলা এবং দোকান লুটপাটের মামলা করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ও সদর উপজেলা (পূর্ব) যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মোজ্জাম্মেল হোসেন মিজান পাটওয়ারী জকসিন দক্ষিণ বাজারের বায়তুল উলুম জামে মসজিদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে ওই মসজিদে তিনি তাফসির মাহফিলের আয়োজন করেন। গত মঙ্গলবার বিকেলে তাফসিরের জন্য বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে হাদিয়া উত্তোলনের সময় জকসিন বাজারের মেসার্স আবু সাঈদ ষ্টোরে গেলে সেখানের ম্যানেজার ফারুক আওয়ামীলীগ নেতা ও মসজিদের সভাপতি মিজান পাটওয়ারীকে উদ্দেশ্য করে গালমন্দ করতে থাকে। এ সময় সে মিজানকে আওয়ামীলীগের চাঁদাবাজ বলে আখ্যায়িত করে। পরে সেখানে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। এ পর্যায়ের ঘটনাস্থলে পুলিশ সদসরা এসে পরিস্থিত শান্ত করার চেষ্টা করে।
অভিযুক্ত ফারুক জেলা শহরের ১২ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ মজুপুর গ্রামের মোল্লা বাড়ির বাসিন্দা। তবে ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই মোল্লা বাড়ির চিহিৃত বিএনপির ৮-১০ জন নেতাকর্মী নেতৃত্বে ১৫-২০ জন ভাড়াটে লোক গিয়ে মিজান পাটওয়ারী ও লাহারকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমানসহ স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উপর অতর্কিত হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেন মিজান পাটওয়ারী। এ ঘটনার পরদিন সকালে জকসিন বাজারের ব্যবসায়ীরা তীব্র প্রতিবাদ জানান এবং বহিরাগত সন্ত্রাসীদের হাতে আওয়ামীলীগ নেতাদের হামলার ঘটনায় বিচার দাবি জানিয়েছেন। এছাড়া ঘটনার বিচার চেয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন ওই মসজিদ কমিটির সদস্য ও মুসুল্লীরা।
আওয়ামীলীগ নেতা মিজান পাটওয়ারী বলেন, মসজিদের তাফসিরের জন্য হাদিয়া তুলতে গিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ের আমি বহিরাগত সন্ত্রাসীদের হাতে হামলার শিকার হয়েছি। এ ঘটনাটি আমি বাজার কমিটি ও থানা পুলিশকে অবহিত করেছি। আমি ছাই- প্রশাসন বিষয়টি সুষ্টু তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।
এদিকে এ ঘটনাটি নিয়ে কথা হয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক মেসার্স আবু সাঈদ ষ্টোরের স্বত্বাধিকারী মো. সিরাজুল ইসলামের সাথে। ঘটনাটিকে তিনি ভূল বোঝাবুঝি বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, মসজিদের তাফসিরের জন্য হাদিয়া তুলতে গেলে তার ম্যানেজারের সাথে মিজান পাটওয়ারীর কথাকাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে দোকানে হট্রগোল শুরু হলে আমি অবগত হই এবং পুলিশ খবর দিই। পুলিশ এসে উভয় পক্ষকে শান্ত করে। পরে আমরা শুনেছি- কারা যেন মিজান পাটওয়ারীর উপর হামলা করেছে। এর পরপরই উৎশৃঙ্খল কিছু লোকজন এসে আমার দোকানের ম্যানেজারকে চড় দেয়। এতে বাধা দিতে গেলে আমার দোকান ঘরের মালিক খোরশেদ আলম হামলার শিকার হন।
দুথপক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগের বিষয়ে তিনি জানান, বাজারে ব্যবসার পরিবেশ রক্ষার্থে উভয়পক্ষ বসে বিষয়টি মিমাংস্যা করার জন্য তিনি প্রশাসন এবং ব্যবসায়ী নেতাদের কাছে দাবি জানিয়েছেন।
তার দোকান লুটপাটের বিষয়ে যে অভিযোগ উঠেছে সে বিষয়ে তিনি বলেন, পুরো ঘটনাটি সিসি ক্যামেরাতে ধারণ হয়েছে। দোকানের ম্যানেজারকে মারধর করলেও লুটপাটের কোন ঘটনা ঘটে নি। এছাড়া হামলার সময় মিজান পাটওয়ারী উপস্থিত ছিলো না বলে জানান তিনি।