রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৪৮ অপরাহ্ন

পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌরশহরে নিয়ন্ত্রণহীন শব্দদূষণ-ভোরের কণ্ঠ।

সৈয়দ মোঃ রাসেল,কলাপাড়া (পটুয়াখালী)প্রতিনিধি / ৬১৫ বার পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : রবিবার, ২ মে, ২০২১

পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌর শহরের রাস্তায় নামলেই অটো রিস্কা ও মোটরসাইকেলের অপ্রয়োজনীয় হর্ন বাজছেতো বাজছেই, মাইকিং হচ্ছে ডায়াগনস্টিক সেন্টার, চশমার দোকান, ক্লিনিকসহ বিভিন্ন সেক্টরের, চলছে গ্যারেজে ঝালাই , থাই এ্যালুমিনিয়াম কাটার কাজ ও যত্রতত্র ওয়ার্কশপের কাজের শব্দ যেভাবে চলছে তাতে পৌর শহরের বাসিন্ধা এবং আগত জনমনে এক দুর্বিসহ অবস্থা হয়ে পরেছে। স্কুল পড়ুয়া কোমলমতি শিশুরা ও ঘরে থাকা অসুস্থ বৃদ্ধা শব্দের যন্ত্রনায় আরো অসুস্থ্য হয়ে পড়ছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় পৌর শহরের রুবান হোটেল রাস্তার উপরে ও কাঠ পট্টি মসজিদের সদর রোড, আংশিক রাস্তা দখল করে বিরামহীন ভাবে চলছে ওয়ার্কশপের ঝালাইয়ের কাজ। পাশেই আলমারি,আলনা তৈরি করে সারিবদ্ধ করে রাখছে রাস্তার উপরে। যেকোন সময় ঘটতে পারে সড়ক দুর্ঘটনা। নতুন বাজার আবাসিক এলাকায় তাসিন থাই এ্যালুমিনিয়াম, ঝুমুর গ্লাস থাই এ্যালুমিনিয়াম, মুক্তা গ্লাস থাই এ্যালুমিনিয়াম দোকানে চলছে থাই কাটার কাজ শব্দে মানুষ অতিষ্ঠ । পৌর শহরের গুরুত্বপূর্ণ বাজারের রাস্তা সহ অলিতে-গলিতে অটো রিস্কা ও মোটর-সাইকেলের অপ্রয়োজনীয় হর্ন বাজছেতো বাজছেই তাতে করে দুর্বিষহ শব্দে মানুষ জন অতিষ্ঠ।

শব্দ দূষণ(নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৬থ এ বিধি ৫(২) এ বলা আছে এলাকা ভিত্তিক শব্দের মানমাত্র যেমন আবাসিক এলাকা দিবা ৫৫, রাত্রি ৪৫, বাণিজ্যিক এলাকা দিবা ৭০, রাত্রি ৬০ ডেসিবেল মাত্রার শব্দ অনুমোদনযোগ্য।

অথচ কলাপাড়ায় মাইকিং, অটো রিস্কা ও মোটরসাইকেলের অপ্রয়োজনীয় হর্ন বাজানোর কারণে যেভাবে শব্দ দুষণ হচ্ছে তাতে কানে কম শোনার সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধি পাবে। ‘ইচ্ছে হইছে তাই বাজাইছি!থ এমন মানসিকতা নিয়েই মনে হচ্ছে ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক এর মালিকরা মাইকিং করছেন। এমনকি ইফতার ও কিংবা নামাজের সময়ও শহরের অলিতে-গলিতে মাইকিং হচ্ছে। জনবহুল এলাকায় গড়ে উঠেছে নতুন নতুন গ্যারেজ, ওয়ার্কশপ, থাই এ্যালুনিয়াম দোকান।

নতুনবাজার এলাকার বাসিন্দা জাকিউন নসীব চঞ্চল বলেন প্রতিদিন সকাল থেকে মধ্য রাত পযর্ন্ত থাই এ্যালুমিনিয়াম কাটার শব্দে আমাদের ছেলে মেয়েরা লেখা পড়া করতে পারছেনা। আমাদের পরিবারের সদস্যরা মাথা ব্যথাসহ নানা রোগে ভুগছে।

কলাপাড়া হাসপাতালের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিন্ময় হাওলাদার বলেন,শব্দ দুষনের কারনে শ্রবন শক্তি কমে যাওয়া, হৃদ রোগী আরো অসুস্থ্য হয়ে যাচ্ছে। স্কুলগামী ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়ায় মনোযোগী হতে পারছে না। এছাড়াও খিটখিটে মেজাজ, পেটের আলসার, অনিদ্রা বা ইনসমনিয়া, মানসিক উত্তেজনা ও উদ্বিগ্নতা বা অ্যাংজাইটি, স্ট্রোক, কর্মজীবীদের ভেতরে কাজের দক্ষতা, মনোযোগ কমে যাওয়া ও সহজেই মেজাজ হারিয়ে ফেলার প্রবণতা বেড়ে যাওয়া। এমনকি শব্দদূষণ মায়ের গর্ভের শিশুর শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধিকেও প্রভাবিত করে।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদুল হক বলেন,আবাসিক এলাকায় মাইকিং, গ্যারেজ , ঝালাই , থাই কাটার কাজ ও যত্রতত্র ওয়ার্কশপের কাজের শব্দে যে দূষন হয় তা এলাকাবাসীদের কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর