কলাপাড়ায় আংশকাজনক হারে বাড়ছে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। মার্চের মাঝামাঝি সময় থেকে এ রোগের প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শয্যা না থাকায় বারান্দার মেঝেতেই ঠাঁই হয়েছে অনেক রোগীদের।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, এ সপ্তাহে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৭৭ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যাই বেশি। প্রতিদিন গড়ে ১২ থেকে ১৫ জন নতুন ডায়রিয়ার রোগী ভর্তি হচ্ছে এখানে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ৫০ শয্যা বিশিষ্ট কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ সর্বমোট ৭৮ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। তাই অতিরিক্ত রোগীকে ফ্লোরে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে। অতিরিক্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি থাকায় চিকিৎসক ও জনবল সংকটে চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে চিকিৎসকরা।
কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স-এর সিনিয়র স্টাফ নার্স বিউটি বিশ্বাস এ প্রতিবেদককে বলেন, এখানে সেবা দেয়ার জন্য আমরা মোট ২৬ জন স্টাফ রয়েছি। ৩/৪ জন মাতৃত্বসহ অন্যান্য ছুটিতে রয়েছেন, করোণা ভ্যাকসিনের কাজে চারজন দায়িত্বরত থাকলেও তিনটি শিফটে ১২ থেকে ১৫ জন উপস্থিত থেকে সেবা দিয়ে যাচ্ছি। তিনি আরো জানান, সিপ্রোফ্লক্সাসিন, মেট্রোনিডাজল, ওমিপ্রাজল এবং খাবার স্যালাইন পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে শুধুমাত্র কলেরা স্যালাইনের কিছুটা সংকট রয়েছে। এছাড়া অতিরিক্ত ভিজিটর হাসপাতলে অবস্থান করায় হাসপাতাল অধিক নোংরা হয় এবং রোগী সেবায় ব্যাঘাত ঘটে।
নাচনাপাড়া থেকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ২০ মাসের ডায়রিয়া রোগী স্নিগ্ধা রায়ের বাবা সঞ্জয় রায় বলেন, মেয়েটি ৪ দিন পর্যন্ত ডায়রিয়া ও জ্বরে আক্রান্ত সকালে ভর্তি হয়েছি সিট না পেয়ে ফ্লোরে চিকিৎসা নিচ্ছি।
বালিয়াতলী থেকে আসা ১ বছর বয়সী তানহার বাবা মমিন গাজী বলেন, তিন দিন পর্যন্ত ডায়রিয়া ও বমি থাকায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এখানে ভর্তি করিয়েছি সিট পাইনি। তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন সকালে একজন ডাক্তার আসেন এরপর সমস্যা হলে এমারজেন্সিতে ডিউটি ডাক্তারের কাছে যেতে হয়।
এছাড়াও ইসা, মারিয়া ও কুলসুম আক্তার বলেন, বেড এবং ডাক্তার সংকট দ্রুত সমাধানের জন্য কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা।
কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিন্ময় হালদার সাংবাদিকদের জানান, শয্যা ও চিকিৎসক স্বল্পতা থাকলেও আমরা রোগীদের উন্নত সেবা প্রদানের সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি। পর্যাপ্ত ঔষধ এবং স্যালাইন মজুত আছে তাই এ নিয়ে রোগীদের আতঙ্কিত না হওয়ার আহবান জানান তিনি।