সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বেতকান্দি গ্রামের সাবিত্রী সাহা। মাস্টার্স শেষ করে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন শিক্ষকতা। উপজেলার বেলতৈল ইউনিয়নের মালতিদাঙ্গা পশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তিনি। ছোটবেলা থেকেই বই পাগল সাবিত্রী সাহা। আর এই বইয়ের প্রতি ভালবাসা থেকেই পথের মধ্যে গড়ে তুলেছেন পাঠাগার। পথচারী এবং সাধারণ মানুষের আত্মিক তৃষ্ণা মেটাতেই তাঁর এ উদ্যোগ। তাঁর মতে, অনেক মানুষ আছেন, যাঁরা বই পড়তে ভালোবাসেন, তবে নিয়মিত বই কিনে পড়ার সামর্থ্য রাখেন না। আবার সামর্থ্য থাকলেও ঘটা করে পাঠাগারে যাওয়া, পাঠাগারের সদস্য হওয়া, নিয়মিত চাঁদা দেওয়া—এসব প্রক্রিয়া অনেকের কাছেই জটিল মনে হয়। তাই ঝামেলা এড়িয়ে সহজে আর বিনা মূল্যে মানুষকে বই পড়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্যই তাঁর এই প্রচেষ্টা। বিভিন্ন মাধ্যম থেকে পাওয়া স্ট্রিট লাইব্রেরির ধারণা নিয়েই মূলত সাবিত্রী সাহা শাহজাদপুরে পথের মধ্যে গড়ে তুলেছেন ‘ পথেই বই পড়ি’ নামের পাঠাগার।
চলতি বছরের ভাষার মাস ফেব্রুয়ারিতে নিজের সংগ্রহে থাকা অল্প কিছু বই দিয়ে উপজেলার বেলতৈল ইউনিয়নের বেতকান্দি গ্রামে পাঠাগারটি চালু করেছেন সাবিত্রী সাহা। অনেকেই সাবিত্রীকে নিরুৎসাহিত করলেও তিনি তাঁর লক্ষ্যে অটুট থেকে পিপাসার্ত পাঠকের তৃষ্ণা মেটাতে বদ্ধপরিকর।
মূলত সাবিত্রী সাহা নিজের সংগ্রহে থাকা কিছু বই দিয়ে পাঠাগারটি চালু করলেও অনেকেই নিজেদের সংগ্রহের বই দিয়ে পথের পাঠাগারটি সমৃদ্ধ করতে সহযোগিতা করছেন। ইতোমধ্যেই পথের পাঠাগার সম্পর্কে জানতে পেরে ‘ দরিদ্র তারকা বইয়ের সঞ্চালক’ নামের একটি অনলাইন বুক শপের পক্ষ থেকে বেশ কিছু বই দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার মাকসুদ রহমান।
সাবিত্রী সাহার এমন অভিনব প্রচেষ্টার প্রশংসা করে রবীন্দ্র পাঠকেন্দ্রের কর্ণধার অধ্যাপক শাহ আলম বলেন, উদ্যোগটি অত্যন্ত প্রশংসনীয়। আশাকরি প্রতিষ্ঠানটি পিপাসার্ত পাঠকের তৃষ্ণা মিটিয়ে মানসিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সবিত্রী সাহা বলেন, পাঠাগারটি চালুর পর মানুষ খুব ভালোভাবে এটি গ্রহণ করেছে। এত দ্রুত যে মানুষের মাঝে পাঠাগারটি সাড়া ফেলেছে তা সত্যি অভাবনীয়। তিনি আরও জানান, পাঠাগারটি যেন টেকসই হয় এবং মানুষের উপকারে আসে সেদিকে লক্ষ্য রেখে কাজ করা হচ্ছে। সেইসাথে পরিকল্পনা আছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এরকম পাঠাগার গড়ে তোলার।