সিরাজগঞ্জের তাড়াশে মাদকে ত্রাশ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে মাদক সেবী ও ব্যবসায়ীর সংখ্যা। করোনা ভাইরাসের কারনে দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায়, গার্মেন্টস সহ বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানে অনেকেই কর্ম হারিয়ে এলাকায় অবস্থান নেওয়ায় মাদকাসক্তদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এই মাদকাসক্তি একটি মারাত্বক সামাজিক সমস্যা । বর্তমানে এটি একটি মরণ নেশায় পরিনত হয়েছে। এটি সমাজে নানা রকম প্রভাব ফেলছে।
সচেতন মহল বলছেন, মাদকাসক্তি যা পারিবারিক দ্বন্দ্ব, সংঘাত,অর্থনৈতিক অবনতি , সামাজিক অস্থিতিশীলতা এবং বিভিন্ন ধরনের অপরাধের পিছনে প্রত্যক্ষ ভুমিকা রাখছে। হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে মরণ নেশা গাজা,মদ,ইয়াবা,বাবা সহ বিভিন্ন নামের মাদক দ্রব্য। যারা এ সমস্ত মাদকে আসক্ত তারা মাদকের টাকা জোগার করতে গিয়ে অনেক সময় চুরি, ডাকাতি,ছিনতাই সহ আইন-শৃংখলার অবনতি করছে। অনেক পরিবারে দেখা দিয়েছে পারিবারির বিচ্ছেদ। নেশার টাকার চাহিদা পুরণ করতে বেড়েছে বিবাহ বিচ্ছেদে ও আত্ম হত্যার মত ঘটনা ।
উপজেলার বেশ কিছু এলাকা রয়েছে আদিবাসী অধ্যুষিত মানুষ। এই সকল এলাকাসহ অন্যান্য এলাকার সিংহভাগ যুবসমাজ মাদক সেবন করছে। ফলে অভিভাবকগণ চরম দুশ্চিন্তায় ভুগছেন।
মাধাইনগর, মাঝদক্ষিণা, কাটাগাড়ী ,গুল্টা,রানীর হাট, নাদোয়ৈদপুর, ১০ নং ব্রীজ এলাকা, ধামাইচ,শ্রীকৃষ্ণপুর সহ বেশ কিছু এলাকায় বাংলা মদ সহ নেশা জাতীয় দ্রব্য অবাধে ক্রয়- বিক্রয় হয়ে থাকে। জাতীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডাঃ আব্দুল আজিজ তার নির্বাচনী প্রচারনায় ঘোষনা করেছিলেন তিনি নির্বাচিত হলে তাড়াশকে মাদক মুক্ত করবেন। নির্বাচিত হবার পর তার কঠোর পদক্ষেপে থানা প্রশাসন জোর তৎপরতা চালিয়ে মাদক কারবারী ও সেবনকারীদে দমন করেছিলেন । বর্তমানে পুনরায় পুর্বের অবস্থানে চলে এসেছে পরিস্থিতি। ইতি মধ্যে র্যাব-১২ গত ২মাসে অভিযান চালিয়ে তাড়াশের জন্তিপুর গ্রাম থেকে ৫৫০পিস ইয়াবা ও ০৪ গ্রাম হেরোইনসহ স্বামী হামিদুল ও স্ত্রী আনোয়ারাকে, ২০ নভেম্বর নওখাদা গ্রাম থেকে ৭০ গ্রাম গাজা, ২০পিস ইয়াবা ও ২ গ্রাম হেরোইন সহ আলমগীর ও সাদিকুল কে, ৪ মার্চ চরকুশাবাড়ী খামার পাড়া গ্রাম থেকে ৩ কেজি ৮শ গ্রাম গাজা সহ জহুরুল ইসলামকে , ২৪ জানুয়ারী তাড়িনীপুরস্থ ৯নং ব্রীজে চেক পোষ্ঠ বসিয়ে ২০ পিস ইয়াবা সহ আলহাজ মন্ডল ও রফিকুলকে এবং ও থানা পুলিশ ২১ নভেম্বর অভিযান চালিয়ে উপজেলার গুড়পিপুল গ্রাম থেকে ৪০ কেজি গাজার গাছ সহ রঞ্জনা নামের মাদক কারবারী ও নলুকান্দি গ্রামের মাদক কারবারী আঃ করিমকে গ্রেফতার করে।
তাই উপজেলাতে মাদকের ত্রাশ ছড়িয়ে পরছে বলে এলাকার সচেতন মহল ধারনা করছেন। র্যাব-১২ ও তাড়াশ থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে মাদক দ্রব্য উদ্ধার ও গ্রেফতার কৃতদের জেল হাজতে পাঠিয়ে দিলেও জামিন নিয়ে ফিরে এসে তারা পুনরায় মাদক ব্যবসা চালিয়ে যায় বলে মন্তব্য করেন অনেকে।
তাড়াশ থানার অফিসার ইনচার্জ ফজলে আশিক জানান, মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিমালা অনুযায়ী আমাদের মাদক বিরোধী অভিযান চলমান রয়েছে। তিনি আর ও বলেন, মাদক গ্রহনকারী বা কারবারী যেই হোক না কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। র্যাব -১২ এর ভারপ্রাপ্ত কোম্পানী কমান্ডার সহকারী পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন মিরাজ বলেন, র্যাব-১২ মাদক বিরোধী অভিযান অব্যাহত রেখেছে । মাদকের সাথে আমাদের কোন আপোষ নেই।