শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৪৫ অপরাহ্ন

শাহজাদপুর প্রেসক্লাব সাংবাদিক রাজিব রাসেলকে বহিষ্কার করেছে।

মোঃ জহুরুল ইসলাম,শাহজাদপুর(সিরাজগঞ্জ)প্রতিনিধি / ৩৯২ বার পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০২১

শাহজাদপুর প্রতিনিধিঃ নিষিদ্ধ নেশা জাত দ্রব্য ইয়াবা ব্যাবসা এবং বিউটি পার্লারের আড়ালে অসামাজিক কার্যকলাপের আস্তানা গড়ে তোলার প্রমাণ পাওয়ায় হঠাৎ বনে যাওয়া কথিত সাংবাদিক রাজিব আহমেদ রাসেলকে শাহজাদপুর প্রেসক্লাব থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার শাহজাদপুর প্রেসক্লাবের কার্যকরি কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বেলা ১১ টা থেকে শুরু করে দীর্ঘ সময় ধরে শুনানি শেষে এবং তথ্য প্রমাণ পর্যালোচনার পর তাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

জানা যায়, রাজিব আহমেদ রাসেল এসএসসিতে অকৃতকার্য হওয়ার পর শাহজাদপুর বাজারে একটি কনফেশনারী দোকান খুলে বসে। পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘ সার্কেল শাহজাদপুর’ নামের একটি গ্রুপ খুলে লাইম লাইটে আসে। সেখান থেকে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে সখ্যতা গড়ে ওঠে। এরপর এমবিএ কমপ্লিট করার ভূয়া কাগজপত্র বানিয়ে একটি অনলাইন পোর্টালের কার্ড নিয়ে শাহজাদপুর প্রেসক্লাবের সদস্য হয়। সেই সুবাদে প্রশাসনের সাথে ঘনিষ্ট হয়ে ওঠে রাজিব রাসেল। এরপরই শুরু হয় তার বেপরোয়া জীবন। দোকান বন্ধ করে স্ত্রীর নামে তৈরি করা ব্যানার সর্বস্য প্রিয়া বিউটি পার্লারে ইয়াবা এবং নারীদের দিয়ে দেহ ব্যাবসার আখড়া গড়ে তোলে।

বিভিন্ন ভিআইপিদের পার্লারে ডেকে নিয়ে অসামাজিক কাজ করিয়ে পরবর্তীতে তাদের সামাজিক ভাবে হেয় করার হুমকি দিয়ে ব্লাক মেইল করে মোটা অংকের অর্থ আদায় করতো এই দম্পতি। এছাড়া রাজিব আহমেদ ও তার স্ত্রী প্রিয়া আহমেদ প্রথম দিকে বিভিন্ন মাদক ব্যাবসায়ীর মাদকদ্রব্য আনা নেওয়া করতো। পরবর্তীতে অতিরিক্ত মুনাফার লোভে নিজেরাই খুচরা বিক্রি শুরু করে।

একপর্যায়ে চট্টগ্রাম থেকে ৪ হাজার ৬’শ পিস ইয়াবার বিরাট চালান নিয়ে আসে শাহজাদপুরে। এই চালান আনতে প্রিয়া আহমেদের বিউটি পার্লারের একজন নারী কর্মীকে ব্যাবহার করা হয়। কিন্তু মেয়েটিকে যে অর্থ দেওয়ার কথা বলে ব্যাবহার করা হয়েছিল তা না দেওয়ায় বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। এরপর একের পর এক গোপন তথ্য বেরিয়ে আসে এই দম্পতির বিরুদ্ধে।

বিষয়টি নিয়ে প্রেসক্লাবে অভিযোগ উঠলে প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ সাধারণ সভা আহ্বান করেন। সে সভায় শুনানি শেষে ৭ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। প্রায় একমাস তদন্ত শেষে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন কমিটি। এরপর ২৮ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার শাহজাদপুর প্রেসক্লাবের কার্যকরি কমিটির মিটিং ডাকা হয়। মিটিং- এ সবকিছু পর্যালোচনা শেষে রাজিব আহমেদ ও তার স্ত্রী প্রিয়া আহমেদের মাদক ব্যাবসার সাথে সম্পৃক্ত থাকায় রাজিব আহমেদ রাসেলকে শাহজাদপুর প্রেসক্লাব থেকে সাময়িক ভাবে বহিষ্কার করা হয় এবং কেন তাকে স্থায়ী ভাবে বহিষ্কার করা হবেনা মর্মে ১০ দিনের মধ্যে জবাব চেয়ে একটি পত্র ইস্যু করা হয়।

এ ব্যাপারে শাহজাদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি বিমল কুমার কুন্ডু জানান, ১৯৮৩ সালে গঠিত ঐতিহ্যবাহী শাহজাদপুর প্রেসক্লাবের বেশ সুনাম এবং মর্যাদা রয়েছে। অতীতে কোন সদস্যের বিরুদ্ধে এরকম মারাত্মক কোন অভিযোগ ওঠেনি। তাই প্রেসক্লাবের সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখতে রাজিব আহমেদ রাসেলকে বহিষ্কার করা হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর